প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ধরনের জাতিগত বৈষম্য সম্পূর্ণ নির্মূল করার লক্ষ্যে বৈশ্বিক প্রচেষ্টা জোরদার করার ওপর জোর দিয়েছেন।
আজ এক তথ্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, জাতিগত বৈষম্য দূরীকরণের জন্য আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই শুভ দিনে, আসুন আমরা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সহিষ্ণু, শান্তিপূর্ণ এবং সহনশীল বিশ্ব গড়ে তোলার জন্য সব ধরণের জাতিগত বৈষম্যের সম্পূর্ণ নির্মূলের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টা জোরদার করি যেখানে কেউ পিছিয়ে থাকবে না।”
তিনি আরো বলেন, “জাতিগত বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষ্যে, আমি বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের পক্ষ থেকে সকল প্রকার বর্ণবাদ, জাতিগত বৈষম্য ও বিদেশীভীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমাদের অটল অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা এবং সহনশীলতা, অন্তর্ভুক্তি ও ঐক্য জোরদার করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে যোগ দিচ্ছি।
তিনি উল্লেখ করেন, সকল প্রকার বৈষম্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের দৃঢ় ও আপোষহীন অবস্থান তার ইতিহাসে গভীরভাবে প্রোথিত।
তিনি বলেন, “বর্ণগত, ভাষাগত এবং জাতিগত কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে আসার ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা আমাদের সহ্য করতে হয়েছিল এবং তা আমাদেরকে সব ধরনের বর্ণবাদ ও অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে অনুপ্রাণিত করেছিল। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত আহ্বান বৈষম্যের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর জন্য বাঙালিদের সংগঠিত এবং সফল মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করতে উদ্বুদ্ধ করেছিল।”
তিনি আরো বলেন, “তাই, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের প্রতি শ্রদ্ধা, সেইসাথে সব ধরনের বৈষম্য দূরীকরণের অঙ্গীকার আমাদের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, জাতিগত বৈষম্য দূরীকরণের আন্তর্জাতিক কনভেনশনের (সিইআরডি) একটি পক্ষ হিসেবে বাংলাদেশ সকল জাতি, সভ্যতা, সংস্কৃতি এবং ধর্মের মধ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জোরদার করতে চায়।
তিনি আরো বলেন, বৈষম্যহীনতা ও সহনশীলতার এই ধরনের অঙ্গীকারের অংশ হিসাবে, বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী ‘শান্তির সংস্কৃতি’ ধারণাকে সমর্থন করে।
তিনি বলেন, এটি সত্যিই হতাশাজনক বাস্তবতা যে, বিশ্ব এখনও বর্ণবাদ, জাতিগত বৈষম্য, অসহিষ্ণুতা এবং বিদেশীভীতিতে জর্জরিত।
তিনি বলেন, “আমাদের প্রতিবেশী দেশে রোহিঙ্গাদের উপর নৃশংস নিপীড়ন একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। তাছাড়া, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের বিস্তারের সাথে সাথে, বর্ণবাদ এবং জাতিগত বৈষম্য, দুর্ভাগ্যবশত সহিংস রূপ ধারণ করছে। এইসব অপকর্মের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একটি পদক্ষেপ-ভিত্তিক পদ্ধতি জরুরি। এই পটভূমিতে, এই বছর দিবসটির পালনের প্রতিপাদ্য ‘বর্ণবাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের জন্য সোচ্চার কণ্ঠ’ বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতে জাতিগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সুদৃঢ় অর্থপূর্ণ পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে।