পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ ) রাত ১টা ১৫ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি… রাজিউন)। এইচ টি ইমামের ব্যক্তিগত সহকারী আবু বকর সিদ্দীক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এইচ টি ইমামের বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম-এর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু ।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচ টি ইমামের মৃত্যুর খবর জানিয়ে বলেছেন, জানাজা ও দাফনের বিষয়টি পরে জানানো হবে।
এইচ টি ইমাম সম্পর্কে তিনি বলেন, এক বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের জীবনাবসান। জীবনের পরতে পরতে যার সফলতা ও প্রভাব ছিলো। বৃহস্পতিবার রাত ১টা ১৫ মিনিটে সিএমএইচ এ জীবন প্রদীপ নিভে যায় তার। টানা ১৩ বছর রাজনৈতিক অঙ্গন ও রাষ্ট্র পরিচালনার নেতৃত্বের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য এই প্রভাবশালী ব্যক্তি অনেকটা হঠাৎ করে নীরবেই চলে গেলেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসী সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্ব পালন করা এইচ টি ইমাম ২০১৪ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
৬০-এর দশকের পূর্ববাংলার রাজনৈতিক অবস্থা এইচ টি ইমামকে ক্ষুব্ধ করে। সরকারের উচ্চপদে অধিষ্ঠিত থাকায় তার চোখে পাকিস্তান মুসলিম লীগ ও সামরিক প্রশাসকদের শোষণ, বৈষম্য, বঞ্চনার রূপ প্রকট হয়ে ওঠে। ’৭১-এর ভয়াল পঁচিশে মার্চ রাতের সংবাদ পাওয়ার আগেই দেশের সংকটজনক পরিস্থিতির কর্মপন্থা নির্ধারণ করে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ, বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সংকট মোকাবিলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধকালে ১৯৭১ সালের জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের আহ্বানে পূবাঞ্চলের আঞ্চলিক প্রশাসনের পদে থেকে মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিব
পদে যোগদান করেন এইচ টি ইমাম। ১৯৭৫ সালের ২৬শে আগষ্ট পর্যন্ত তিনি এই পদে আসীম ছিলেন। বিজয়ের অব্যবহিত পর বাংলাদেশের বিপর্যস্ত প্রশাসন-ব্যবস্থা সচল করে তোলা এবং দেশ পুনর্গঠনের কাজে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অন্যান্য সহকর্মী এবং মন্ত্রিবর্গের সঙ্গে তিনি নিয়োজিত ছিলেন। এই দায়িত্বে সাড়ে চার বছরে এইচটি ইমাম স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ সরকারের নতুন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, করপোরেশন ইত্যাদির রূপরেখা তৈরি ছাড়াও পাকিস্তান আমলের পুরাতন নিয়ম-কানুন ও পদ্ধতির আমূল সংস্কারে মুখ্য ভূমিকা রাখেন।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।