করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে গত বছরের মার্চ মাস থেকে লকডাউনে চলে যায় বিশ্বের প্রায় সব দেশ। বাংলাদেশও সব বন্ধ করতে বাধ্য হয়। পর্যায়ক্রমে যান চলাচল, সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও হাট-বাজার খোলা হলেও এখনো বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
তবে সম্প্রতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে বিভিন্ন পর্যায় থেকে দাবি উঠেছে। এমনকি সরকারকে একটি আইনি নোটিশও পাঠিয়েছেন এক অভিভাবক। এমন প্রেক্ষাপটে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে খোলার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর পরিস্থিতি দেখে স্কুল-কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
৪ ফেব্রুয়ারি না খুললেও দ্রুতই যে খোলা হবে তা শিক্ষামন্ত্রীর কথায়ও অনেকটা স্পষ্ট। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দেশে করোনার প্রকোপ কমেতে শুরু করেছে, ভ্যাকসিন এসে গেছে। ফলে স্বাস্থ্য সুরক্ষার সব নিয়ম মেনেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হবে।
করোনা আক্রান্তের আশঙ্কার কথা জানিয়ে সব শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আপনারা স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বজায় রাখবেন। সবাই মাস্ক পরে ক্লাস করবে, নিজেদের কাছে স্যানিটাইজার রাখবে এবং নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে বসবে। এছাড়া প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে। বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধি এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা মনিটরিং করবেন বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।
দীপু মনি বলেন, আজকে যারা পরীক্ষার্থী তারা কিন্তু কেউ ঘরে বসে নেই। সবাই নিজেদের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। ফলে করোনা যে কোনো জায়গা থেকে হতে পারে। সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার পরও হতে পারে। শুধু যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসলেই করোনা হবে বিষয়টা এমন নয়। এ সময় নিজের উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমি অনেক সতর্ক ছিলাম, তবুও করোনায় আক্রান্ত হয়েছি।
আমরা চাই না কেউ করোনায় আক্রান্ত হোক। সবাইকে বলব, সতর্ক থাকতে। তারপরও কারো জ্বর, ঠান্ডা বা গলাব্যথা থাকলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না আসতেও অনুরোধও করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, অনেকেই অসুস্থ থাকা বা কোন দুর্ঘটনার জন্য পরীক্ষা দিতে পারে না। দুর্ঘটনা দুর্ঘটনাই। এটি স্বাভাবিক পরিস্থিতি নয়। একজনের জন্য যাতে অন্য কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকেও নজর দিতে বলেন মন্ত্রী।
অটোপাস প্রসঙ্গে দীপু মনি বলেন, অনেকেই প্রশ্ন করছেন ২০২০ সালে অটোপাস দেওয়া হলে এখন কেন নয়? কিন্তু যারা ২০২০ সালে পরীক্ষা দিয়েছে তারা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল। পরীক্ষার ঠিক দু’দিন আগে পরীক্ষা বন্ধ হয়েছিল। কিন্তু এখন যারা আছেন তারা তো নিজেরোই বলছেন এক বছর কোন ক্লাস করেননি। তাহলে কোন পড়াশোনা এবং পরীক্ষা ছাড়া কীভাবে পরের ক্লাসে উঠিয়ে দেই?
তাদের পরীক্ষা নিতে হলে পড়াতে হবে। এজন্য তিন-চার মাসের সংক্ষিপ্ত কোর্স পড়িয়ে এই অংশটুকুর উপরই তাদের পরীক্ষা নেওয়া হবে। অন্য কিছু তাদের পড়তে হবে না। এজন্য তাদের চাপ না নিয়ে মনোযোগী ও আত্নবিশ্বাসী হওয়ার পরামর্শ দেন শিক্ষামন্ত্রী।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।