দেশের পূর্বাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রতিক বন্যার কারণে আগামী ১ সেপ্টেম্বর দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান সীমিত করে এনেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
আজ বুধবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ ঘোষণা দিয়েছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এর আগে মঙ্গলবার রাতে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দেশে ভয়াবহ বন্যায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য কর্মসূচির আয়োজন থাকছে না। বরং সীমিতভাবে কর্মসূচি পালিত হবে। ১ সেপ্টেম্বর কেবল শেরেবাংলা নগরে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।
এছাড়া দেশের মানুষ ও ছাত্রজনতার আন্দোলনে হতাহতদের জন্য দোয়া করা হবে জানিয়ে মহাসচিব আরও বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যাতে দ্রুত দেশে ফিরে আসতে পারেন তার জন্য দোয়া করা হবে।
ভারতের বাঁধ খুলে দেয়ায় এই বন্যা, দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বন্যার্তদের আমরা দলের পক্ষ থেকে সাধ্যমতো সহায়তা করছি। একটি কেন্দ্রীয় ত্রাণ সেলও গঠন করা হয়েছে। চাল, ডাল, তেল, ওষুধ, কাপড়, শুকনা খাবারসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। দলের নেতা-কর্মীরা প্রায় এক কোটি টাকার ত্রাণ সামগ্রী বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করেছেন।
কিছু কিছু জায়গায় দুর্বৃত্তরা অপকর্ম করে বিএনপির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে-উল্লেখ করে মহাসচিব বলেন, আমরা কোনো দুর্বৃত্তপনা বা অপরাধ বরদাশত করবো না। যারাই এসব করছে তাদের বিরুদ্ধে দল ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ঢালাওভাবে মামলা যাতে না হয়, আপনারা প্রাথমিকভাবে তদন্ত করুন। এ বিষয়ে দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এমন কোনো মামলা করবেন না যাতে সারবস্তু থাকবে না। আমরা একটা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করে একটি স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। কারণ অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম লক্ষ্য হলো নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা। গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া পরিবর্তন হয় না।
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, আজকে ছাত্রজনতার বিপ্লব নস্যাতের চক্রান্ত হচ্ছে। ভারত থেকে কিছু জিনিস অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, যা সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দিচ্ছে। বিএনপির বিরুদ্ধে ফের পরিকল্পিতভাবে চক্রান্ত হচ্ছে। অথচ গত ১৫ বছরে বিএনপির প্রত্যেকটি নেতা-কর্মী নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। মিথ্যা মামলায় জর্জরিত। বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে কারান্তরীণ করা হয়েছিল। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশান্তরিত করা হয়েছে। এমন কোনো নেতাকর্মী নেই যাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়নি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দ্রুত সংলাপে বসা উচিত। জামায়াত-শিবিরের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নই। যারাই বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের পক্ষে তারা রাজনীতি করবে এটা তাদের অধিকার।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।