চলতি সপ্তাহেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন কাতালান নেতা কার্লোস পুজেমন। অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যের জন্য স্পেনের স্বায়ত্তশাসিত এই অঞ্চলটির রাজধানী বার্সেলোনায় গত রোববার হয়েছে বিশাল মিছিল সমাবেশ। উদ্ভূত প্রেক্ষাপটে পুজেমনের ওপর চাপ বেড়েছে। কিন্তু গতকাল সোমবার পর্যন্ত স্পেন সরকার কিংবা কাতালোনিয়া অঞ্চল কেউই দেখায়নি নমনীয় সুর। সংলাপে বসার কোনো ইঙ্গিতই দেননি কাতালান নেতা কার্লোস ও স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাজয়।
স্পেন থেকে স্বাধীনতার প্রশ্নে ১ অক্টোবরের নিষিদ্ধ গণভোটের পর আজ আঞ্চলিক পার্লামেন্টে ভাষণ দেবেন কার্লোস পুজেমন। এই ভাষণে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে মাদ্রিদ। বলা হচ্ছে, চার দশক আগে স্পেনে গণতন্ত্র চালু হওয়ার পর সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকটে পড়েছে দেশটি।
কাতালোনিয়া কর্তৃপক্ষ বলেছে, স্পেন থেকে স্বাধীনতার পক্ষে গণভোটে ৯০ শতাংশের বেশি সমর্থন পেয়েছে তারা। কিন্তু ভোটের আগের জনমত জরিপে আসে, স্বাধীন হওয়ার আশা নিয়ে কাতালানবাসীর মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। মাত্র ৪৩ শতাংশ ভোট পড়ায় এই শঙ্কা আরও জোরালো হয় বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।
কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) মধ্যস্থতা করার আহ্বান জানিয়েছেন কার্লোস পুজেমন। কিন্তু ব্রাসেলস এতে কোনো আগ্রহ দেখায়নি। কাতালোনিয়ার সঙ্গে সীমান্ত লাগোয়া প্রতিবেশী দেশ ফ্রান্স গতকাল সোমবার বলেছে, কাতালোনিয়ার একতরফা স্বাধীনতার ঘোষণা তারা স্বীকৃতি দেবে না।
আর কাতালোনিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিলে অঞ্চলটির স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেওয়া হবে বলে রোববার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাজয়। কাতালান নেতাদের ‘অবস্থান পরিবর্তনের এখনো সময় আছে’ বলে তিনি বলেন। এমনকি কার্লোস পুজেমনকে ‘এসব বন্ধ’ করতে আহ্বান জানিয়েছেন স্পেনের বিরোধীদলীয় নেতা পেদ্রো শানচেফও।
কাতালোনিয়ার পুলিশ বলেছে, রোববার রাজধানী বার্সেলোনায় অনুষ্ঠিত স্বাধীনতাবিরোধী মিছিলে প্রায় সাড়ে তিন লাখ লোক অংশ নিয়েছে। এতে স্পেন ও কাতালোনিয়ার পতাকা নিয়ে মিছিলকারীরা অংশ নেয়। তাদের হাতে থাকা ব্যানারে লেখা ছিল ‘একসঙ্গে আমরা শক্তিশালী’ কিংবা ‘কাতালোনিয়াই স্পেন’।
এর আগে গণভোটের দুই দিন পর বার্সেলোনায় অনুষ্ঠিত স্বাধীনতার পক্ষে মিছিলে লাখো লোক অংশ নিয়েছিল।
আজ কাতালোনিয়ার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা) পার্লামেন্টে তাদের নেতা কার্লোস পুজেমন ভাষণ দেবেন। তিনি বলেন, স্পেন সরকারের সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ হচ্ছে না, কারণ কেন্দ্রীয় সরকার স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনায় আগ্রহী না।
পুজেমন বলেন, ‘কাতালোনিয়ায় যা হচ্ছে তা-ই সত্য। তারা (স্পেন) সেটা পছন্দ করুক বা না করুক। লাখো লোক ভোট দিয়েছে, যারা চায় বিষয়টির ফয়সালা হোক। আমাদের তা নিয়ে কথা বলতে হবে।…সময় চলে যাচ্ছে, কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কিছুই ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে না। আমরা যা করার তা-ই করব।’ আর এ জন্য আইন অনুসারে এগোবেন বলেও জানিয়েছেন কার্লোস পুজেমন।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।