বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড টেরিফ কমিশন আন্তর্জাতিক বাজার এবং মার্কিন ডলারের মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দেবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। কেউ নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করলে, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ভোজ্যতেলের দাম যেভাবে টেরিফ কমিশন নির্ধারণ করে দেয়। একইভাবে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে আরও কিছু পণ্যের ন্যায্যা মূল্য আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ঠিক করা হবে। যদি কোন ব্যবসায়ী নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দাম নেয়- তাহলে কেবল জরিমানা নয়, আমরা সরাসরি তার বিরুদ্ধে মামলায় চলে যাব। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য, সরবরাহ ও বাজার পরিস্থিতি সংক্রান্ত পর্যালোচনা সভাশেষে বাণিজ্যমন্ত্রী সংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, বৈঠকে চাল, গম, ভোজ্যতেল, পরিশোধিত চিনি, মশুর ডাল, পেঁয়াজ, রড ও সিমেন্টসহ মোট ৯টি পণ্যের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এসব পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করবে ট্যারিফ কমিশন। তবে এই পণ্যের বাইরে আরও কোন পণ্যের মূল্য অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধি করা হলে সেগুলোরও মূল্য নির্ধারণ করা হবে।
জ্বালানি তেল ও ডলারের মূল্য বৃদ্ধির সুযোগে কোন ব্যবসায়ী অযৌক্তিক দাম নিচ্ছে কি-না, সে বিষয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি-অনেক পণ্যের দাম যে হারে বেড়েছে, যেটা গ্রহণ যোগ্য নয়। এজন্য সঠিক দামটি নির্ধারণ করে দেওয়া হবে, যাতে কেউ অনৈতিক সুযোগ না নিতে পারে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জনস্বার্থ বিবেচনায় কোন পণ্যের উপর থেকে শুল্ক কমানোর প্রয়োজন হলে সেটা আমরা করব। যাতে কেউ মনোপলি সুযোগ নিতে না পারে। যেমন চালের উপর যে ডিউটি ছিল সেটা অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এতে ৮/৯ টাকা দাম কমে যাওয়ার কথা। এমনি করে আরও কোন পণ্যের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে শুল্ক কমানো হবে এবং আমদানি করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় কোন কোন পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমে গেলেও তার পুরো সুফলটা আমরা পাচ্ছি না।
তিনি জানান, ডলারের দাম বৃদ্ধির পেছনে কারসাজির প্রমাণ পাওয়ায় ৬টি ব্যাংককে ইতোমধ্যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানালেও টিপু মুনশি বলেছেন, সৎ ব্যবসায়ীদের সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে। যাতে তারা সুষ্ঠুভাবে ব্যবসা করতে পারে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন ও পামতেলের মূল্য কিছুটা কমলেও ডলারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে এর সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। সরকার এ বিষয়ে সতর্ক আছে, কিছুদিন পর পর এর মূল্য সমন্বয় করা হচ্ছে।
সভা পরিচালনা করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। সভায় বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড টেরিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপার্সন মো. মফিজুল ইসলাম, ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)’র চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, এফবিসিসিআইয়ের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, চট্রগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক সময়ের সংবাদ.কম প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।